বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৫ অপরাহ্ন
শরীক ফাঁকি দেয়া, ফারায়েজের অংশ নিয়ে লুকোচুরি খেলা, জমি ক্রেতাকে ভুল তথ্য দেয়া বাঙালীর রক্তের সাথে মিশে আছে। তাই এজমালি সম্পত্তি ক্রয়ের পূর্বে ওয়ারিশান সনদপত্র যাচাই করে নিন। যা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান কর্তৃক ইস্যু করা হয়। এজমালি সম্পত্তি বিক্রেতার নিজ নামে নামজারি বা মিউটেশন হয়েছে কি-না, দেখে নিন। যদি না থাকেন, তাহলে দেখে নিন বিক্রেতার পূর্ব পুরুষ অর্থাৎ বিক্রেতা যার ওয়ারিশ হিসেবে সম্পত্তি প্রাপ্ত হয়েছেন তার নামে রেকর্ড হাল খতিয়ান আছে কি-না। যদি থাকে তাহলে দেখে নিন বিক্রেতার ফারায়েজমত প্রত্যেক দাগে প্রাপ্ত বিক্রয়যোগ্য অংশ। আর যদি কোন এজমালি সম্পত্তির লিখিত বাটোয়ারা দলিল থাকে, তবে তা অবশ্যই রেজিস্ট্রি হতে হবে এবং তিনি দলিলে যে পরিমান সম্পত্তি পেয়েছেন শুধু সেটুকুই বিক্রি করতে পারবেন। পাশাপশি আপনাকে দেখে নিতে হবে যে, যৌথ ইজমেন্ট সুবিধা আছে কি-না। অর্থাৎ পথের অধিকার, চলার অধিকার, আলো বাতাস ও পানির অধিকার। সেই সাথে দেখতে হবে যে, ওই জমি ক্রয়ের পর প্রিয়েমশান বা অগ্রক্রয় বা শুফা অধিকার প্রয়োগের মামলা হবার সম্ভাবনা আছে কি-না। সেকারণ এরুপ এজমালি সম্পত্তি ক্রয়ের ক্ষেত্রে বায়নানামা দলিল কিংবা সাফকবলা দলিলে যতদূর সম্ভব অন্যান্য ওয়ারিশানগণকে সাক্ষী ও সনাক্তকারী হিসেবে রাখা উচিৎ। তাহলে অন্যান্য শরীক বা সহ-শরীকগণ এ সুযোগ আর গ্রহন করতে পারবে না। পাশাপাশি এ জাতীয় এজমালি সম্পত্তির বিক্রয় চুক্তি হবার পর সম্পত্তির উপর নোটিশ টাঙানো এবং পত্রিকায় আইনগত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারেন। সংশ্লিষ্ট জমি সরকার বা কোন সংস্থাকে ঋণ গ্রহণের মর্গেজ দেয়া আছে কি-না, বিক্রি প্রস্তাবিত জমিতে কোন বিরোধ বা মামলা মোকদ্দমা আছে কিনা-এগুলো ভাল করে যাচাই করে নিন। নতুবা সারা জীবনের অর্জন দিয়ে একটুকরো জমি কিনে বাঁকি জীবন ঝামেলার মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হতে পারে।
লেখকঃ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, আইনগ্রন্থ প্রণেতা, সম্পাদক-প্রকাশক ‘দৈনিক ইন্টারন্যাশনাল’। ইমেইলঃ seraj.pramanik@gmail.com